আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বসতঘর ভাংচুর

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জমি দখল করতে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও বসতঘর ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেড়া দিয়ে চলাচলের একমাত্র পথটি বন্ধ করে দেয়ায় গত ৭ দিন ধরে চরম ভোগান্তিতে একটি পরিবার।

জানা গেছে, উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বালিদিয়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর দুই ছেলে আব্দুল করিম ও মিয়া হোসেনের মধ্যে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলেছিলো কয়েক বছর ধরে। আব্দুল করিমের ছেলেদের নামে ২২৭৫ দাগে ৫০ শতাংশ জমি জমাখারিজ হয়। ওই একই দাগে ১৩ শতাংশ জমি খারিজ হয়েছে মিয়া হোসেনের নামে। আব্দুল করিমের ছেলেদের নামে জমাখারিজ হওয়া ৫০ শতাংশ জমির এক অংশে একটি টিনসেট ঘর নির্মাণ করেছিলেন। ওই ঘরের জায়গাটি মিয়া হোসেনের নিজের দাবি করে তিনি বেদখলের চেষ্টা করলে আদালতে মামলা করেন করিমের ছেলে নাঈম মিয়া।

চলতি বছরের ৭ জুলাই বিজ্ঞ আদালত ওই জমিতে বিবাদীদেরকে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার আদেশসহ ১৪৪ ধারা জারি করেন। গত ১৫ জুলাই ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৪৪ ধারার ওই আদেশের নোটিস জারি করেন। এরপর মিয়া হোসেনও আদালতে গিয়ে তার মতো করে, তার দাবি পেশ করলে, ৩০ জুলাই তার পক্ষে ১৪৪ ধারা জারি করে আদালত নালিশী ভুমিতে দ্বিতীয়পক্ষের প্রবেশ নিষেধ করে দেন। ০২ অক্টোবর ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৪৪ ধারার ওই আদেশের নোটিস জারি করে।

দুইপক্ষের ওপরই আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও তা অমান্য করে গত ১১ অক্টোবর শনিবার দুপুরে আব্দুল করিমের একটি টিনসেট ঘর ভাড়াটে লোকজন নিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয় মিয়া হোসেনরা। বাঁধা দিতে গেলে হামলার শিকার হন করিম। তার গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে বিবাদীরা। টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় করিমের পরিবারের সদস্যদের চলাচলের একমাত্র পথ। পরে ৯৯৯ ফোন করলে ঘটনাস্থলে যান ত্রিশাল থানা পুলিশ। ওই ঘটনায় ১২ অক্টোবর রোববার আব্দুল করিমের ছেলে নাঈম মিয়া বাদী হয়ে মিয়া হোসেন ও তার ছেলে শাহীন মিয়াসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ত্রিশাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, করিমের একটি টিনসেট ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ঘরের টিন। ঘরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া দুই শিক্ষার্থীর বই ভাসছে পুকুরের পানিতে। করিমের পরিবারের সদস্যদের চলাচলের একমাত্র পথ বন্ধ করতে দেয়া হয়েছে টিনের বেড়া। প্রতিবেশিদের বাড়ির ভেতর দিয়ে ও ক্ষেতের আইল হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদেরকে।

ভোক্তভোগি আব্দুল করিম বলেন, আদালত তো তাকে ঘর ভাঙার অনুমতি দেয়নি। ভাড়াটে লোকজন নিয়ে ঘর ভাঙলো, মারধর করলো, শেষে চলাচলের রাস্তাটাও বন্ধ করে দিল। গত ৭ দিন ধরে চরম ভোগান্তিতে আছি।

আদালত আপনাকে বসতঘর ভাঙার অনুমতি দিয়েছেন কিনা তা জানতে চাইলে মিয়া হোসেন বলেন, আদালত দ্বিতীয়পক্ষ (আব্দুল করিম) কে প্রবেশ নিষেধ করে দিয়েছে। তারা আদালতের অর্ডার আইন্না ঘর করছে, আমি আদালতের অর্ডার আইন্না ঘর ভাঙছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তারেক হাসান জানান, শান্তি রক্ষায় বিজ্ঞ আদালত ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করেছে। ঘর ভাংচুরের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্বের খবরঅলকা নদী বাংলা মার্কেটের মোবাইল চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন সংক্রান্তে গ্রেফতার-৩
পরবর্তি খবরইসলামপুরে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ড. সামিউল হক ফারুকীর পথসভা অনুষ্ঠিত