আরিফ রববানী, ময়মনসিংহ।।
অপরাধ নির্মুলে পুলিশের নেতৃত্ব সবসমই চ্যালেঞ্জিং।সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই সমাজের মাদক, ছিনতাই, চুরি,ডাকাতি,ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং সহ সব ধরণের অপরাধ নির্মুল করে ময়মনসিংহের সাধারণ মানুষকে নিরাপদ রাখার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি মাদক,সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ছিনতাইকারীসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছেন।
সাধারন মানুষের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। আর এজন্যই মাদক ও ছিনতাই রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তার নেতৃত্বে জেলার সকল থানার পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশনায় অপরাধমুক্ত জেলা উপহার দিতে ইতোমধ্যেই ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানা, ভালুকা মডেল থানা, জেলার ত্রিশাল,ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও,নান্দাইল,তারাকান্দা,ফুলপুর,ঈশ্বরগঞ্জসহ সবকটি থানা পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। টহল জোরদার করার পাশাপাশি ছিনতাইকারীদের খুঁজছে পুলিশ। বিশেষ করে ছিনতাইকারীদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে দিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এবার ময়মনসিংহের মাটিতে ছিনতাইকারীদের ঠাঁই নেই। মাদক, ছিনতাইকারীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম ও ভালুকা মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবির এরই মাঝে মাদক ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে কাজ করছেন। কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ সুত্র জানিয়েছে-মাদক ও ছিনতাই ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কঠোর থেকে আরো কঠোর । অপরাধী যেই হোক, যতই ক্ষমতাধর হোক, কারো রেহাই নেই। মাদক ও ছিনতাইকারীদের ধরতে কঠোর নির্দেশ রয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। চিহ্নিত মাদক ও ছিনতাইকারীদের তালিকা তৈরী করে অভিযান চলছে এবং চলবে।
এদিকে, ময়মনসিংহ কে নিরাপদ শহর হিসেবে গড়ে তুলতে মাদক ও ছিনতাইকারীদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি সুত্রে বলা হয়েছে- ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। নিরাপদ ময়মনসিংহ গড়তে ছিনতাইকারীদের সম্পেের্ক তথ্য ইনবক্সে দিন। আপনার পরিচয় গোপন করা হবে। পুলিশের এই গোপনীয়তার আশ্বাসের পর থেকেই বেশ ভালো সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন । তিনি বলেন, তথ্য প্রদানকারীদের বিষয়টি গোপনীয় রাখার আশ্বাস দেওয়ার পর থেকে জনগণের কাছ থেকে আমরা বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। তারা ইনবক্সে প্রচুর তথ্য দিচ্ছেন। তথ্য পাওয়ার পরপরই আমরা টিম পাঠিয়ে সেখানে অভিযান চালাচ্ছি। এ কাজটি এতটাই গোপনীয়তার সঙ্গে করা হচ্ছে যে, তথ্যদাতার নাম আমি ছাড়া অন্য আর কেউ জানতে পারছে না। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধেও সোচ্চার থাকব আমরা। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এ শহরকে নিরাপদ চান বলেও জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান-
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের বিভিন্ন থানা ও ইউনিটিতে জনবল কম থাকায় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অধিক পরিমাণে ডিউটি করতে হচ্ছে। যে কারণে মাঝখানে ময়মনসিংহের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি দেখা দিয়েছিলো। তবে বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে। কমেছে অপরাধ, বেড়েছে মানুষের নিরাপত্তা।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশ জনগণের কাঙ্খিত সেবা দেয়ার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রম আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে ময়মনসিংহের সবকটি থানায় কর্মরত অফিসার ইনচার্জ সহ সকল পুলিশ সদস্য, পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের কাছে ইতিবাচক প্রশংসা কুড়াতে নিরলসভাবে দিনরাত সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। মাদক বিরোধী অভিযান এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করতে আলাদা আলাদা টিমও গঠন করা হয়েছে। আন্তজেলা ডাকাতদের গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস)আব্দুল্লাহ আল মামুন তার অধিনস্থ অফিসার এবং ফোর্সদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহবাসীর কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ফিরিয়ে এনেছেন জেলার ১২টি থানা সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগে শৃঙ্খলা। এই প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন তাঁর কাজের পরিধি ও অভিমত ব্যক্ত করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, জেলা পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনা ও পরামর্শ মোতাবেক আমার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ভুক্তভোগীরা এখন থানায় গিয়ে আগের মতো হয়রানির শিকার হচ্ছেন না। কাঙ্খিত সেবা পেতে পুলিশকে টাকাও দিতে হচ্ছেনা।
অপরাধ কিংবা অনৈতিক কাজের দায়ে কোন পুলিশ অফিসার বা কোন সদস্য অদ্যাবধি বরখাস্ত বা ক্লোজ করার অভিযোগ নেই বলেও জানান তিনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো উন্নয়নে সামনে আরো কিছু শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
মাদক,ছিনতাইকারী নিধনের পাশাপাশি ডাকাত নিধনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সার্থক হয়েছে জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা । এছাড়া আবাসিক হোটেল ও আবাসিক মেস গুলোতে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধেও তিনি সোচ্চার রয়েছেন। অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও সন্ত্রাস নির্মূল করতে তিনি থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশকেও কাজে লাগাচ্ছেন। সড়কে রাতের বেলায় যাতে ডাকাতি না হতে পারে সেজন্য হাইওয়ে পুলিশকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা পুলিশ । তাছাড়া থানার ওসিদেরকে নিজ নিজ থানায় সন্ত্রাস নির্মূল করতে এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করার নির্দেশ প্রদান করেছেন এই সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রতিটি কাজের আগে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তার অধিনায়কত্ব মেনে ১২টি থানার সকল পুলিশ সদস্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ময়মনসিংহবাসীর হৃদয়ের স্পন্দনে ঠাঁই করে নিয়েছেন কর্মদক্ষ এই পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশ বাহিনীকে। প্রতিটি মুহুর্ত আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে আসছি। আইজিপি মহোদয়ের চৌকস নেতৃত্ব ও বিচক্ষণতা, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজির সঠিক দিকনির্দেশনায় প্রতিটি থানার অফিসার ও পুলিশ সদস্য ধৈর্যের সাথে ও নিরলস পরিশ্রমে ময়মনসিংহের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিশেষ করে মাদক,ছিনতাই ও আন্তজেলা ডাকাত নিয়ন্ত্রণ ও গ্রেফতারে আইজিপি সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ প্রশংসিত হয়েছে।