ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকান্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩

96

ফারুক আহমেদ, ময়মনসিংহ ব্যুরো :
ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে দাড়িয়েছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছেন। এ পর্যন্ত সাতটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান এখনো নিরুপন হয়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন আটজন। এদের মধ্যে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি তিনজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহতরা হলেন প্রাইভেটকার চালক সদর উপজেলার কিছমত গ্রাামের বাসিন্দা জালাল উদ্দিনের ছেলে হিমেল মুন্সী (২৭) ও রহমতপুর এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (২৯)। সোমবার সন্ধ্যার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল কুদ্দুস। তার আগে মারা যান হিমেল। রাতে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প¬াস্টিক সার্জারির ওয়ার্ডে আবুল হোসেন (৪৫) নামে এক কনফেকশনারি দোকানির মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা তিনজন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. শফিক উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দগ্ধ অবস্থায় স্থানীয় খাবার হোটেল ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (৩৫) ও তার স্ত্রী সুমি আক্তার (৩০), ফিলিং স্টেশনের ইলেক্টিক ইঞ্জিনিয়ার তোফাজ্জল হোসেন (৪২), রহমতপুর এলাকার আবুল হোসেন (৪৫), আব্দুল কুদ্দুস (২৯), আব্দুল মালেক (৫০), মুক্তাগাছা উপজেলার খেরুয়াজানী ইউনিয়নের আনোয়ার হোসেন, জামালপুরের ঘোড়াদাপ এলাকার হাশেম আলীসহ আটজন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাত সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল কুদ্দুস (২৯) মারা যান।
জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন জানান, ঘটনার সময় ঢাকা থেকে আনা একটি এলপিজি গ্যাসের ট্যাঙ্ক লরি থেকে গ্যাস নামানো হচ্ছিল। এর একটু দূরেই একটি প্রাইভেটকারে তিতাস গ্যাস দেওয়া হচ্ছিল। এসময় গ্যাস লিকেজ থেকে হঠাৎ এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলের সাতটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এরমধ্যে একটি প্রাইভেটকার, তিনটি সিএনজিচালিতসহ অন্যান্য গাড়ি রয়েছে। এসময় ভস্মীভূত প্রাইভেটকার থেকে হিমেল নামের একজনের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত হন আরও আটজন। এর আগে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট টানা দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন্নাহার নাহারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, গতরাতে ময়মনসিংহ থেকে গুরতর দগ্ধ অবস্থায় নারীসহ পাঁচজনকে আনা হয়েছিল। আনার পরে আবুল হোসেন নামে একজনের মৃত্যু হয়। ৪ জনের মধ্যে কামরুল হাসান ১০০ শতাংশ, সুমি আক্তার ৩২ শতাংশ, তোফাজ্জল হোসেন ১০০ শতাংশ এবং আব্দুল মালেককে ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। দগ্ধের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের সবাইকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেফার্ড করা হয়েছে। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উল্রেখ্য সোমবার দুপুর সোয়া দুইটার দিকে ময়মনসিংহের রহমতপুর বাইপাস সড়ক এলাকায় আজাহার ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

পূর্বের খবরজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ-এমএএস ভর্তির সময় বৃদ্ধি
পরবর্তি খবরযুবদলের কর্মীসভায় ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২