‘ছাত্রলীগের কোন নেতা-কর্মী-সদস্যকে আর কখনো পাঠদান করাবো না’

140

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল করে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে শ্লোগান দেয়।

বুধবার (১৭ জুলাই) ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরবর্তি কর্মসূচী ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী নজরুল কলেজ, সরকারী নজরুল একাডেমীসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।

আন্দোলনকারীরা জানায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ দফায় দফায় হামলা করে শত শত নিরীহ শিক্ষার্থীদের আহত করেছে, একই সাথে তাদের বর্বর হামলায় ৬জন নিরহ ছাত্র শহীদ হয়েছে। এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে অন্যথায় ছাত্র সমাজ আরও কঠোর হতে বাধ্য হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না। তাই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা ত্রিশাল ও ময়মনসিংহ এসে কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
এদিকে সড়ক অবরোধের ফলে ফোর লেনের মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। যাত্রীদের বিকল্প সড়কে হেঁটে যেতে দেখা গেছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই স্থানীয় প্রশাসনসহ পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ, সহকারী পুলিশ সুপার (ত্রিশাল সার্কেল) অরিত সরকার ও ত্রিশাল থানার অফিসর ইনচার্জ কামাল হোসেন যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অবরোধ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন ঘটনাস্থলে।

অপরদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে ফারহানা তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দেন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কোন নেতা-কর্মী-সদস্যকে আর কখনো পাঠদান করাবেন না’। তাঁর পোষ্টে তিনি আরও লিখেন ‘আমার বিভাগের কোন শিক্ষার্থী যদি কোনভাবে ছাত্রলীগের কোন কমিটিরসঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে তারা যেন আমার ক্লাসে না আসেন। অন্য বিভাগের সাধারণত কোর্স নিউনা, নিলে তাদের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য হবে। যারা লোভের বশবর্তী হয়ে নিরস্ত্র সতীর্থদের শারীরিক আঘাত করে তারা আমার ছাত্র হতে পারেনা। এই নৈরাজ্য আর অরাজকতার মাধ্যে আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়িঁয়ে অন্তত এইটুকু নিশ্চিত করতে চাই যে অন্যায় ও জুলুম যারা করে তাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। শিক্ষার্থীদের জয় হোক’।

পূর্বের খবরত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়ক দেড়ঘন্টা অবরোধ
পরবর্তি খবরজাতীয় মৎস্য পদক নিলেন ২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান