শিক্ষার্থীদের বই মিলল ভাঙ্গারি দোকানীর বাড়িতে

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
বছর শেষে অতিরিক্ত বই শিক্ষা অফিসে জমা দেয়ার কথা থাকলেও ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পাঁচশত কেজির অধিক বই মিলেছে ভাঙ্গারি দোকান মালিকের বাড়িতে। ৬ষ্ঠ হতে ৯ম শ্রেণির এসব নতুন বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের রওশন আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।
চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত বই নিয়েছিল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের রওশন আরা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য শিক্ষাবোর্ডের অতিরিক্ত বই উত্তোলন ছাড়াও শ্রেণি ভিত্তিক দুই একটি বিষয়ের শিক্ষার্থীদের না দিয়ে, কেজি দরে বিক্রি করতে তা মজুত রাখা হয়েছিল বিদ্যালয়ে। বিক্রির পর বিষয়টি জানতে পারেন শিক্ষার্থী অভিভাবক, কমিটির সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা এও জানতে পারেন উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী আন্ধারিয়াপাড়া হুকুম চাঁদা গ্রামের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ি আজিজুলের বাড়িতে রয়েছে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের বিপুল পরিমানে পাঠ্যবই। এমন খবরে শনিবার (১৯ নভেম্বর) স্থানীয়রা তার বাড়িতে গেলে সেখানে মিলে ৮ বস্তা বই।
স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল জানায়, বিভিন্ন জায়গা হতে পুরাতন জিনিসপত্র ক্রয় করে নিজ বাড়িতে রেখে পরে অন্যত্র বিক্রি করি। গত বৃহস্পতিবার রওশন আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৩৯ টাকা কেজি ধরে ৫৩০ কেজি বই ও খাতা ক্রয় করি। এসময় বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হুমায়ুন স্যার, রোকন স্যার, দেলোয়ার কেরানীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সহকারি শিক্ষক হুমায়ুন ৩৯ টাকা দরে ৫৩০ কেজি বইয়ের মোট ২০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
অনেকগুলো বইয়ের কভার পৃষ্ঠা ছিড়া থাকায় নতুন নাকি পুরান তা আমি জানিনা।
ছাত্রী অভিভাবক রাজু মিয়া জানান, আমার মেয়ে সবগুলো বই পায়নি। আমার চাচাতো বোনের পুরাতন বই এনে আমার মেয়ে পড়ছে।
কমিটির অভিভাবক সদস্য কফিল উদ্দিন, সুলতান মিয়া ও আজিজুল হক বলেন, এমনিতেই সারাদেশে বইয়ের সংকট অথচ আমাদের ম্যাডাম মেয়েদের বই না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেন। সে বেশি বেশি চাহিদা দিয়ে বইয়ের সংকট সৃষ্টি করতে চায়।
শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ২০২২ সালের চাহিদার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আছমা আক্তার এতথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, এবিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। প্রধান শিক্ষককে বলেছি অব্যাবহৃত বই থাকলে সেগুলো উপজেলায় জমা দিতে। সেগুলো উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন ভাবে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।