
অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ে যারা হামলা করেছিল তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৫ এপ্রিল) গণভবনে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারি ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সরকারের অর্থ বিভাগ সেতু কর্তৃপক্ষকে এই টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অন্তত দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে যারা ফায়ার সার্ভিসের অফিসে হামলা ও কাজে ব্যাহত করেছেন তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক উন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা ভালো। জনগণের সমর্থনই সরকারের মূল শক্তি।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশি ও বিদেশি প্রবল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীকে সক্ষমতা দেখিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর অনেক দেশের সঙ্গেই কথা বলেছিলাম; কিন্তু সবাই সরে দাঁড়িয়েছিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রবল বাধা অতিক্রম করে এই সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে এমন একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছিল যেটা খুবই দুঃখজনক। একটা অবাঞ্ছিত ঘটনা জন্ম দিয়ে এ সেতু নির্মাণে কেবল বাধা দেওয়াই হয়নি; আমাদের ওপর একটা বদনামও দিতে চেয়েছিল। আমরা সেটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম।
সরকারপ্রধান বলেন, একদিকে যখন বিশ্বব্যাংক টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিল, তখন সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাও সরে দাঁড়াল। তখনই বলেছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে করব। বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা আমাজান নদীর পরই আসে পদ্মা নদীর নাম; কাজেই সেখানে একটা সেতু নির্মাণ করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, সেটা আমরা করতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা কথা এখানে বলতে চাই, সরকার গঠনের পর থেকে লক্ষ করেছি, সবার মধ্যে একটা ধারণা ছিল কোনো না কোনোভাবে বা কারও কাছ থেকে সাহায্য না পেলে এক কদমও এগুতে পারব না। এ ধরনের ধারণা নিয়েই কিন্তু সবাই চলত। এ জিনিসটা কিন্তু খুব খারাপ লাগতো আমার কাছে। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমরা যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছি; মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি; একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে আত্মমর্যাদার বোধ থাকার কথা, সেখানেই বড় একটা ঘাটতি লক্ষ করতাম। সে কারণে আমি একটা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে যেদিন করতে পারব, সেদিন করব, তাছাড়া নয়। এভাবে কেউ (একটা সংস্থা) আমাদের অপমান করবে আর আমরা সেটা সহে নেব, এটা কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ দেখিয়ে দিতে পেরেছে যে, আমরাও পারি। এটা আমাদের গর্ব, সক্ষমতা ও অহংকারের প্রতীক হয়ে থাকবে।’