করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লাইফ সাপোর্টে আছেন মঞ্চ ও ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ও নাট্যপরিচালক আজিজুল হাকিম।
বিষয়টি আজকালের খবরকে নিশ্চিত ডিরেক্টরস গিল্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল হাসান।
অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় আজিজুল হাকিমকে। একই দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এই অভিনেতাকে।
এ ব্যাপারে ডিরেক্টর গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক আজকালের খবরকে বলেন, ‘হাকিম ভাই, জিনাত ভাবী এবং তাদের সন্তান করোনা পজিটিভ হন সম্প্রতি। মা ও ছেলের অবস্থা স্বাভাবিক থাকলেও গতকাল অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় হাকিম ভাইকে। রাতেই আমার সঙ্গে কথা হয়েছে ভাবীর সঙ্গে। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে হাকিম ভাইয়ের অবস্থার অবনতি হয়েছে শুনে ছুটে যাই হাসপাতালে সেখানে গিয়ে ওনাকে দ্রুত লাইফ সাপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়েছি।’
তিনি বলেন, প্রেসার কমে গিয়েছিলো এখন (বিকাল পৌনে চারটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সময়) কিছুটা স্থিতিশীল। হাকিম ভাইয়ের আরেকটা সমস্যা হলো তার নাকে পানি চলে এসেছিলো। শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাপক সমস্যা ফলে তাকে ভেন্টিলেশন সার্পোট দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে খুব ভালো নেই আমাদের প্রিয় অভিনেতা হাকিম ভাই। সবাই তার ও তার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।’
এর আগে ১০ নভেম্বর নমুনা পরীক্ষায় আজিজুল হাকিমের সঙ্গে তার স্ত্রী জিনাত হাকিম ও ছেলে মুহাইমিন রেদোয়ান হাকিমেরও পজিটিভ ফল আসে। চিকিৎসকের পরামর্শে তারা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গতকাল ১২ নভেম্বর আজিজুল হাকিমের অবস্থার অবনতি ঘটলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
১৯৮১ সালে টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে ছোট পর্দায় (এখানে নোঙর, কোন কাননের ফুল) অভিষেক হয় এই রোমান্টিক অভিনেতার। এরআগে এই অভিনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াকালীন যুক্ত হন আরণ্যক নাট্যদলে। সেখানে তিনি ওরা কদম আলী, ওরা আছেই বলেই, ইবলিশ, নানকার পালা, গিনিপিগ, সমতট, পায়ের আওয়াজ শোনা যায় মঞ্চ নাটকে দুর্দান্ত সময় কাটান। পরবর্তীতে ঢাকা পদাতিকের হয়ে তালপাতার সেপােই, ঢাকা থিয়েটারের হয়ে শকুন্তলায় অনবদ্য অভিনয় করে দর্শক নন্দিত হন। রোমান্টি অভিনেতা হিসেবে ক্রমশ তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়া ১৯৯৮ সালে দিকে টেলিভিশন নাটকের দিকে মনোযোগী হন। তার পরিচালিত প্রথম নাটক যা হারিয়ে যায়। অপরদিকে প্রথম মঞ্চ নির্দেশক হিসেবে ‘পাথর’ নির্দেশনা দেন। জল পড়ে পাতা নড়ে তার পরিচালিত প্রথম ধারাবাহিক।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো- সময় অসময়, ইতি তোমার আমি, তুমি আসবে বলে, প্রিয়া, কে কার অলঙ্কার ইত্যাদি। এছাড়া তিনি হুমায়ুন আহমেদের শঙ্খনীল কারাগার, তৌকির আহমেদের জয়যাত্রা সিনেমায় অভিনয় করেন। রোমান্টি অভিনেতা হিসেবে আফজাল হোসেনের পর নব্বই দশকে তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।